ছেলেদের স্বপ্নদোষ কেন হয়? জেনে নিন বিস্তারিত

মানসিক দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় কি?স্বপ্নদোষ কি? স্বপ্নদোষ কেন হয়? এবং এই সম্পর্কিত অসংখ্য প্রশ্ন থাকে একজন কিশোর এর মনে যে কিনা বয়ঃসন্ধিকালে কিংবা উঠতি তারুণ্যে পদার্পণ করেছে। বয়সন্ধিকালের স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্ভরযোগ্য তথ্য না পাওয়ার ফলে, কিংবা কাউকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করতে লজ্জা বোধ এর কারণে অথবা সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে অনেকেই এ বিষয়ে চিন্তায় ভুগে এবং নানান ভুল ভ্রান্তি নিজেদের ভিতর পুঁষে রাখতে থাকেন।


এই প্রবন্ধে আমরা এ সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব এবং আমাদের উদ্দেশ্য হবে এ প্রবন্ধটি পড়ার পর কোন পাঠক এই স্বাভাবিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পরবর্তীতে কোনরকম দ্বিধায় কিংবা হীনমন্যতায় না ভোগে কিংবা ভুল তথ্যের শিকার না হয়।

স্বপ্নদোষ কি?

স্বপ্নদোষ হলো একজন নারী-পুরুষের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা। মানব সন্তান বিশেষিত ছেলেরা বয়সন্ধিকালে কিংবা উঠতি তারুণ্য বয়সে পৌঁছালে তাদের বীর্য থলিতে বীর্য এবং অন্ডকোষে শুক্রাণু তৈরি হয় এবং সময়ের সাথে সাথে বীর্য ক্রমাগত বীর্য থলিতে জমা হতে থাকে। বীর্য থলি সাধারণত একটি ধারণ ক্ষমতা থাকে। আর এই ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে নিদ্রারত অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপথে বীর্যপাত ঘটে এবং এর ফলে দেহে বীর্যের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়, একেই মূলত নৈশকালীন নির্গমন, কিংবা ঘুমন্ত/নিদ্রারত রাগমোচন, নিদ্রারত যৌন স্বপ্ন কিংবা নৈশপতন এবং বাংলায় স্বপ্নদোষ বলা হয়ে থাকে। 
বাংলায় শব্দটির নামে দোষ থাকলেও মূলত এটি কোন ধরনের দোষ নয় বরং একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া।বীর্য মানবদেহে প্রয়োজন মতো তৈরি হয় এবং সময়ের সাথে তা বের হয়ে যায়। এটি মানব দেহের একটি অমূল্য সম্পদ তবে পাশাপাশি এটি দেহের ভিতরেই থেকে গেলে ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। তাই কুদরত এর নিয়ম হলো অবিবাহিত যুবকের বীর্য স্বাভাবিক ও প্রকৃতিগতভাবে দেহ থেকে যথাসময়ে নির্গত হয়ে যাওয়া।স্বপ্নদোষের সময় অনেকে স্বপ্নে অবচেতনভাবে যৌন কর্মকান্ডের প্রতিচ্ছবি অবলোকন করে থাকেন। 

তবে উক্ত অনুভূতি ছাড়াও স্বপ্নদোষ সংঘটিত হতে পারে। এটি সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে কিংবা উঠতি তারুণ্যে সবথেকে বেশি ঘটে। পুরুষদের ক্ষেত্রে তাদের স্বপ্নদোষ নির্ণয় করা সহজ আর এর কারণ হলো তাদের বীর্য। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে স্বপ্নদোষ হলে যোনি পথ ভেজা ভেজা অনুভূত হতে পারে।
১৩ থেকে ১৯ বয়সের ছেলেদের এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে স্বপ্ন দোষ খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। আবার অনেকের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পার হয়ে যাবার অনেক পরেও এরকম ঘটতে পারে। ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে বীর্যপাতের পরিমাণ কম কিংবা বেশি হতে পারে। তবে কেউ যদি টেস্টোস্টেরন সমৃদ্ধ ওষুধ সেবন করে থাকেন তবে তার স্বপ্ন দোষের মাত্রা বেড়ে যায়। 

বীর্যপাত দূষণীয় নয় তবে তা যেন বেশি পরিমাণে না হয়। এটি সমস্যার কারণ হতে পারে তখনই যখন মাসে ৪ থেকে ৫ বার কিংবা তার অধিক সময় বীর্যপাত হয়ে থাকে। এমনটা হলে প্রয়োজন হয় চিকিৎসা এবং আনুষঙ্গিক প্রতি ব্যবস্থার তবে স্বাভাবিকভাবে বীর্যপাত ঘটলে কোন যুবকের ঘাবড়াবার কিংবা চিন্তা করার কিছু নেই। বীর্য বেশি হয়ে গেলে তা তরল হয়ে স্থলন হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

ছেলেদের স্বপ্নদোষ কেন হয়?

পূর্বে বলা হয়েছে স্বপ্নদোষ এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটি কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা নয়। প্রজননক্ষম জীব হিসেবে মাদক প্রজাতির স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার একটি অংশ মাত্র এই শারীরিক প্রক্রিয়া। আমাদের শরীরে বীর্য প্রয়োজন মত তৈরি হয় এবং বীর্য ক্রমাগত বীর্য থলিতে জমা হতে থাকে আর যখন এই বীর্যথলির ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম হয়ে যায় তখন তা কুদরত এর নিয়ম অনুসারে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। মূলত শরীরে বীর্যের পরিমাণ যখন অতিরিক্ত হয় তখনই বীর্যপাত হয়। আর এটি বীর্যপাতের মূল কারণ। 
বয়সন্ধিকালে দেহের যৌন বৈশিষ্ট্যসমূহ বড় ধরনের ফলাফল স্বরূপ এটি ঘটে থাকে‌। তাছাড়াও স্বপ্নদোষ হওয়ার মূল কারণ হলো বয়সন্ধিকালে যৌন হরমোনের আধিক্য। এই ব্যতীত বেশ কিছু অনিশ্চিত কারণ ও রয়েছে। যেমনঃ 
  • স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বেশি যৌন বিষয়ক চিন্তা করা। 
  • ঘুমাতে যাবার পূর্বে যৌন বিষয়ক চিন্তা করা কিংবা স্থিরচিত্র বা ভিডিও চিত্র দেখা। পর্নোগ্রাফি কিংবা নিজের ছবিতে আসক্ত হওয়া। 
  • যৌন উদ্দীপনা মূলক বই পাঠ করা। তবে সবার ক্ষেত্রেই যে বিষয়বস্তু একই হবে তা কিন্তু নয়। 
অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়সন্ধিকালে কোন রকমই স্বপ্নদোষের ঘটনা ঘটেনি তার মানে এই নয় যে তার কোন সমস্যা আছে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বপ্নদোষের পরিমাণ সাধারণত কমতে থাকে।

স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয়

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে স্বপ্নদোষ ঠিক কতদিন পরপর হয় কিংবা কতদিন পর পর স্বপ্ন দোষ হওয়া স্বাভাবিক। স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয় এর নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই এটি এক একজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হয়ে থাকে। স্বপ্নদোষ সাধারণত কৈশোর কালীন সময়ে শুরু হয় কারো কারো ক্ষেত্রে এটি সাধারণত ৯-১০ বছরে প্রথমবারের মতো হতে পারে। কৈশোর কালীন সময়ে স্বপ্নদোষ সব থেকে বেশি হয় এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর পরিমাণ কমতে থাকে। 
স্বপ্নদোষ ঠিক কতদিন পর পর হয় কিংবা কতদিন পর পর হলে তা স্বাভাবিক এর কোন বাধা ধরা নিয়ম নাই অনেকের ক্ষেত্রে এটি সপ্তাহে ২ বার হতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় মাসে হয়তো একদিন হয় আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় সারা জীবন এক বড় স্বপ্নদোষ হয়নি। আবার অনেকের এমনও হয় বয়সন্ধিকাল এর গণ্ডি পেরিয়ে স্বপ্নদোষ হচ্ছে। এর কোনটাই অস্বাভাবিক নয়। তবে কোনো কারণে যদি কারো মনে হয়ে থাকে যে এটি অতিরিক্ত হারে হচ্ছে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে।

স্বপ্নদোষ হলে কি পাপ হয়?

আমাদের অনেকে মনে নেই ভ্রান্ত ধারণা থাকে যে স্বপ্নদোষ কোন ধরনের স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া নয় এবং এর ফলে আমরা ভাবি ঘুমন্ত অবস্থায় আমাদের শরীর থেকে বীর্য নির্গত হলে বোধ হয় আমাদের পাপ হয়। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়। স্বপ্নদোষের ফলে আমাদের কোন ধরনের পাপ বা গুনাহ হয় না বরং যেমনটা এই প্রবন্ধে পূর্বে বলা হয়েছে এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরিক একটি প্রক্রিয়া। এটি প্রজননতম জীব হিসেবে মানপ্রজাতির স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার একটি অংশ মাত্র। 
মূলত শরীরের হরমোনের আধিক্যতার ফলে উৎপাদিত বীর্য শরীরের দিকে বাইর হওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে শরীরে এক প্রকার উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে শরীরকে শিথিল এবং পরিশান্ত করে। এটা সম্পূর্ণ প্রকৃতিগত এবং স্বাভাবিক একটি ব্যাপার তাই এটি নিয়ে মোটেও চিন্তা করার কিছু নেই। তবে কেউ যদি এমন পরিস্থিতিতে পড়ে সে নারী হোক কিংবা পুরুষ ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে স্বপ্নদোষ হয়ে থাকলে অবশ্যই গোসল করে নেওয়া উচিত।

কি করলে স্বপ্নদোষ আর হবে না

মূলত স্বপ্নদোষ হল একজন নারী কিংবা পুরুষের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। ছেলে মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে এটি হওয়া খুবই সাধারণ। এটি নিয়ে চিন্তিত হওয়া কিংবা ঘাবড়ে যাবার কোন কারণ নেই। এটি যেহেতু একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া যা কিনা প্রজননক্ষম জীব হিসেবে মানব প্রজাতির স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার একটি অংশ সেক্ষেত্রে এটি একদম বন্ধ করার কিংবা না হওয়ার কোন উপায় নেই। 
একসময় দেখবেন নিজে থেকেই স্বপ্নদোষ হওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিংবা পরিমাণ একদমই কমে গেছে যা সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকেই ভুল তথ্য দিয়ে থাকে এবং অনেক কিছু খেতে বলে থাকতে পারে যেমন- বেলপাতা যা ভুলে খাওয়া উচিত হবে না এবং এর পাশাপাশি কখনোই কোন ধরনের ওষুধ ও সেবন করবেন না। তবে ক্ষেত্রবিশেষে স্বপ্নদোষ এড়ানোর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমনঃ 

  • প্রথমত যৌন উত্তেজক চিত্র, স্থিরচিত্র, ভিডিও চিত্র, অর্ধনগ্ন ছবি, যৌন উদ্দীপক বই পড়া ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। 
  • ঘুমোতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে নিন। এটি স্বপ্নদোষের চাপ কমাতে শরীরকে সাহায্য করে। 
  • অশ্বগন্ধা এক্ষেত্রে আপনার জন্য উপকারী বিবেচিত হতে পারে। স্বপ্নদোষের সৃষ্ট সমস্যার উপকার সহ, যৌন স্বাস্থ্যশুদ্ধি, বেশি শক্তি বজায় থাকা, দেহে হরমোনের ব্যালেন্স রাখতে সহায়তা করে। 
  • প্রতিনিয়ত সামান্য পরিমাণ হলেও পুদিনা পাতা অথবা মিছরি খাবার অভ্যাস আপনার জন্য উপকারী হতে পারে। 
  • আপনি চাইলে পবিত্র আল-কোরআনের ৩০ নম্বর পারার সূরা - তারিক পড়ে ঘুমাতে যেতে পারেন। এর সাথে অন্যান্য দোয়া পাঠ করতে থাকলেও আল্লাহর রহমত আপনার উপর বর্ষিত হবে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে। 
  • গুরু পাক কিংবা উত্তেজক খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা শ্রেয়। নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করা এক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। 
তবে মনে রাখতে হবে এগুলো কোন ধরনের চিকিৎসা নয় বরং কিছু উপায় মাত্র ক্ষেত্রবিশেষে স্বপ্নদোষ এড়ানোর জন্য।

স্বপ্নদোষ হওয়ার পর কি খাওয়া উচিত

যেহেতু স্বপ্নদোষ একদমই শারীরবৃত্তিয় কারণে সংগঠিত একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সেহেতু এতে ভীতির কোন কারণ নেই। তবে অনেকে মনে করেন স্বপ্ন দোষ হলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঝিমঝিম করে, পেশীতে শক্তি কম অনুভূত হয় ইত্যাদি যদিও এসবের কোন বৈজ্ঞানিক যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই কিংবা প্রমাণ নেই সবাই মানসিক স্থিতি মাত্র কিংবা চিন্তার ফলে এমনটা মনে হয় তারপরও কারো যদি এমনটা মনে হয় তাহলে তাদের জন্য উত্তম সমাধান হলো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ। কিছু কিছু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সুপার ফুড রয়েছে যা শরীরকে খুব দ্রুত শক্তিশালী সতেজ, এবং কর্মঠ করে তুলতে যথেষ্ট উপকারী। চলুন আলোচনা করা যাক সেই সকল খাবারের বিষয়ে। 

  • পাকা কলাঃ পাকা গলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম রয়েছে যা মানব দেহের যৌন রস উৎপাদন এবং শরীরের টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এর পাশাপাশি কলাতে রয়েছে বোমেনাইল এনজাইম যার যৌন উদ্দীপক হরমোন গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • বাদাম এবং বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবারঃ চিনা বাদাম, কুমড়োর বীজ, শিমের বিচি এজাতীয় খাবারগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনোআনস্যাচুরেটড ফ্যাট এবং জিংক থাকে যা শরীরকে শক্তিশালী করা এবং এর পাশাপাশি যৌন সমর্থ্য বাড়াতেও সহযোগিতা করা। 
  • ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেট স্পার্ম এর পরিমাণ বাড়াতে এবং এর গুণগতমান বৃদ্ধি করতে যথেষ্ট কার্যকর একটি খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। 
  • ডিম এবং দুদ্ধ জাত খাবারঃ ডিম যে আমাদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কতটা পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাদ্য তা সম্পর্কে মোটামুটি আমাদের সবার একটি ধারণা রয়েছে। এই খাদ্যে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন এবং আমিষ থাকে যার শরীরে হরমোনের কার্যক্রম বজায় রাখে এবং এর পাশাপাশি মানসিক চাপ কমোতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। দ্রুত কর্মশক্তির যোগান দিতে এবং পেশি শক্তি বৃদ্ধি করতে এই ডিমের কোন বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি খাঁটি দুধ, মাখন, দই, পনির ইত্যাদি দুদ্ধ জাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ ফ্যাট এবং আমিষ থাকে যা শরীরকে কর্মচঞ্চল গড়ে তুলতে সহযোগিতা করে এর পাশাপাশি এই সকল খাদ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে, শরীর সুগঠিত রাখতে, হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়

যেহেতু স্বপ্নদোষ একটি কুদরত এর দান এবং এটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে আর এর পাশাপাশি বয়সন্ধিকালের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সেক্ষেত্রে এটি বন্ধ করার কোন উপায় নেই। তবে কেউ চাইলে ইসলামিক উপায়েও এটাকে এড়াতে পারেন নিম্নলিখিত কৌশল গুলো অবলম্বনের মাধ্যমে। 
  • প্রথমত ঘুমানোর সময় বিভিন্ন শরয়ী আদব পালন করার মাধ্যমে স্বপ্নদোষ কমানো যেতে পারে। যেমন ঘুমোতে যাবার পূর্বে উঁচু করে নেওয়া এবং এরপর ডান কাতে শোয়া এবং উবুর হয়ে শোয়া থেকে বিরত থাকা। 
  • ঘুমানোর পূর্বে আয়তাল কুরসি পাঠ করা 
  • সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও নাস পড়ে দুই হাতে ফু দিয়ে সমস্ত শরীরে গুলিয়ে নেওয়া এবং এরকম তিনবার করা। 
  • যখন পর্যন্ত ঘুম না এসেছে ততক্ষণ অব্দি দোয়া পড়া। 
  • যৌন কিংবা বিবাহের চিন্তা মনে না নিয়ে আসা। এসব চিন্তা মাথায় আসলে নিয়মিত সূরা পড়তে থাকা। 
  • শরীরের পবিত্রতা রক্ষা করা 
  • ইসলাম এবং দ্বীন এর পথে আসা।

আমাদের শেষ কথা 

স্বপ্নদোষ শব্দটিতে দোষ উল্লেখ থাকলেও এটি শুধুমাত্র একটি অপশব্দ বা অপপ্রচার। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মাত্র কোনো রকম দূষিত বস্তু না। একটি মানব শিশু যখন শৈশবে পেরিয়ে কৈশরে পা রাখে তখন তার যে সকল শারীরিক কিংবা মানুষের পরিবর্তন দেখা যায় তার মধ্যে স্বপ্নদোষ অন্যতম। আমাদের দেশের কোমলমতি ছেলে বা মেয়েরা শৈশব থেকে কৈশরের পদার্পণ করার সময় এই সকল চিরন্তন এবং স্বাভাবিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারে না।

যার ফলে তাদের মনে ভ্রান্ত ধারণা সহ নানা রকমের অপব্যাখ্যা গেঁথে থাকে। সুতরাং আমাদের উচিত যথেষ্ট সচেতনতার সাথে তাদের এসব বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করা যাতে করে পরবর্তী সময়ে তারা হীনমন্যতায় না ভোগে এবং কোনো রকম ভুল সিদ্ধান্ত না গ্রহণ করে। যে সকল পাঠকেরা এই সকল বিষয় নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন আশা করি এই প্রবন্ধটির মাধ্যমে তাদের সকল ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়ে যাবে এবং তারা এই স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url